অনলাইন ডেস্ক:
‘বাংলাদেশের গর্ব’ স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এক মাসে (২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই) সেতুদিয়ে চলাচল করা যানবাহনের কাছ থেকে ৭৪ কোটি ২৬ লাখ ৬৩ হাজার ১৫০ টাকা টোল হিসেবে আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এই সময়ে সেতুর দুই প্রান্ত থেকে মোট ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬২টি যনবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল বাদে সব ধরণের পরিবহণ রয়েছে।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ এই সেতুটি ৩০ হাজার কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এই ব্যয় মেটানো হবে সেতু পারাপার যানবাহনের কাছ থেকে আদায় করা টোল থেকে আসা অর্থ দিয়ে। এতে ২৫ থেকে ২৬ বছর সময় লাগবে বলে প্রথমিক সময় ঠিক করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। তিন মাস পরপর মোট ১৩৬ কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা থাকলেও যানবাহন পারাপারের হিসেবে ধারানা করা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্যয়ের অর্থ উঠে আসবে।
সরকারের করা এক জরিপে দাবি করা হচ্ছে- পদ্মা সেতুর ফলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এ সেতুকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যপক গুতি আসবে। পদ্মা সেতুর বিষয়ে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া মন্তব্য সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলছেন, টোল থেকে আসা অর্থ কিভাবে কোন খাতে খরচ করা হবে সেসব খাত নির্দিষ্ট করা আছে। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধ, রক্ষণাবেক্ষণ, আদায়কৃত আয়ের ওপর মূল্য সংযোজন কর, টোল আদায়কারীর খরচসহ খাতগুলোতে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
তিনি জানান, এ নিয়মে কোন ব্যত্যয় হবে না, তাতে কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আয় না হলেও, ব্যবস্থা একই। নিজস্ব অর্থায়েনে নির্মিত পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় মূলত অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে। দুই হাজার উনিশ সালের অগাস্টে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঋণ চুক্তি করে সেতু কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি অনুযায় তাদের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ এক শতাংশ সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণ তিন মাস পরপর মোট ১৩৬ কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে। এর বাইরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ বছরে ৬০০ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করতে হবে তাদের, রক্ষণাবেক্ষণের চার্জ বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে আয়ের সাত শতাংশের বেশি ব্যয় হবে।
এছাড়া প্রতি ১০ বছর পরপর সেতুতে মেরামতের দরকার হতে পারে, এমন ধারণা থেকে একটি অর্থ নির্দিষ্ট করে গচ্ছিত রাখা হবে। আদায় করা টোলের ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হিসেবে যাবে সরকারি কোষাগারে। সব খরচ মেটানোর পর যে অর্থ উদ্ধৃত্ত থাকবে সে অর্থ জমা থাকবে সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে, যার ওপর আয়কর দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
একটি দৃশ্যপট মিডিয়া লিঃ
Leave a Reply