ভৈরব প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের বসত বাড়ির বিল্ডিং নির্মাণ কাজ বন্ধ ও চাঁদা দাবিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ আল আমিন কাজীর বিরুদ্ধে। ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের কাজী বাড়ির ভুক্তভোগী আকলিমা বেগম ও তা পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আল আমিন কাজী।
জানাযায়, শহরের চন্ডিবের কাজী বাড়ির মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র আল-আমিন কাজীসহ কাজী বাড়ির লোকজনের সাথে একই বাড়ির মৃত আবুল কাশেম মিয়ার সন্তান আলী হোসেন, মিজান ও আকলিমা বেগমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সম্পত্তি মিয়ে বিরোধ চলছিলো। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক পৃথক মোকাদ্দমার ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কিশোরগঞ্জ, শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষের জন্য ১৪৪/১৪৫ ধারা নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু আল আমিন কাজী আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তার বাড়ি পূণনির্মাণ করে এবং প্রতিপক্ষ আকলিমা বেগমের নিজ ভুমিতে বাড়ি নির্মাণে করতে গেলে সে নিজে বাধাগ্রস্থ করে এবং ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে হয়রানি করার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
আল আমিন কাজী বাদী হয়ে মিথ্যা অভিযোগে আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মোকাদ্দমাটি গত ১৮জুলাই,২০২২খ্রি. আদালত খারিজ করে দেয় বলে জানান আকলিমা বেগম। কিন্তু হয়রানির উদ্দেশ্যে দ্বিতীয়বার আবারো মিথ্যা অভিযোগ এনে আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে মোকাদ্দমা করেন বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী আকলিমা বেগম আরও জানান, আমার বাপ দাদারা আল-আমিন কাজীর দাদার কাছ থেকে বাড়ির করার জন্য জায়গা কিনেন ২৮ শতাংশ। বর্তমানে আমাদের দখলে আছে ১৪ শতাংশ। কিন্তু বাকী ১২ শতাংশ জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছেনা। ওই জায়গা নিতে হলে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আল আমিন কাজী। চাঁদা দাবি করায় আলামিন কাজীর বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছি।
একই জায়গা ফেরত না দেয়ায় আকলিমা বেগমের বড় ভাই অপর ভুক্তভোগী মোঃ আলী হোসেন বাদী হয়ে আল আমিন কাজী গংদের বিরুদ্ধে ২নং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কিশোরগঞ্জে গত ২২/০৫/২০২২ খ্রি. একটি মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী মোঃ আলী হোসেন জানান, পৈত্রিক ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত নালিশা ভূমির চারিদিকে বাউন্ডারি ওয়াল ও ইমারত নির্মাণসহ গাছপালা রোপন করে ভোগদখল করছেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গায় বেদখলের জন্য হুমকি প্রদানসহ চাঁদা দাবি করতো। এরই জের ধরে গত ২২মে, বিবাদীগণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ চন্ডিবের মৌজার আরএস-১১৫১, দাগনং- ৭১৬২, জমির পরিমান ২শতাংশ আমার ভুমিতে অনধিকার প্রবেশ ভাবে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করেন এবং বাউন্ডারি দেয়াল ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত আল-আমিন কাজী বলেন, তারা আমার দাদার কাছ থেকে জায়গা কিনেছেন, সেই হিসেবে তারা আমাদের দাদার কাছ থেকে নিবেন, আমরা কেন দিব? আর আমরা মামলা করেছি আদালতে, তাই আমরা মামলাতেই শেষ করব। তিনি চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর হাজী মনির হোসেন জানায়, বিষয়টি ভৈরব পৌরসভার মেয়র মহোদয়কে অবগত করেছি। আমি আলামিন কাজীকে তাঁর কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য বলেছি। কিন্তু সে আজ নয় কাল করতে করতে সময় ক্ষেপন করেছে। তাকে দরবারে বসার জন্য বলা হলে সে বসতে রাজি হয়না। পরে সে আদালতে গিয়ে ১৪৪ ধারার জারি করান। দুই পক্ষই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ১৪৪ধারা জারি করান। কিন্তু সে আকলিমার বাড়ির কাজ বন্ধ করেছে অথচ নিজের বাড়ি নির্মাণ কাজ ঠিকই করেছে।
এবিষয়ে ভৈরব থানার এএসআই আবদুল করিম জানান, দুই পক্ষেরই আদালতে মামলা রয়েছে। আদালত শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে দুইপক্ষের বিরুদ্ধে ১৪৪/১৪৫ধারা জারি করেছেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী দু’পক্ষকে নোটিশ প্রদান করা হয়।
একটি দৃশ্যপট মিডিয়া লিঃ
Leave a Reply